উৎরাইল বাজার, বিরিশিরি, দূর্গাপুর
বাস যোগে ঢাকা হতে ময়মনসিংহ আসতে হবে। তারপর ময়মনসিংহ-নেত্রকোণা রাস্তার শ্যামগঞ্জ হয়ে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি কালচারাল একাডেমীতে আসা যায়। এছাড়া ট্রেনযোগে পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া স্টেশনে নেমে অটো বা সিএনজি যোগে আসা যেতে পারে।
শ্যামগঞ্জ-হতে বিরিশিরি সরাসরি সড়কপথে
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সংরক্ষণ, পরিচর্যা,উন্নয়ন ও চর্চা, লালনের লক্ষ্যে ১৯৭৭ সালে স্বরাষ্ট্র্ মন্ত্রণালয়ের ‘বিশেষ এলাকা উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার নেত্রকোনা মহকুমার দূর্গাপুর থানাধীন বিরিশিরিতে ‘উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী’ নামক এ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয় । পরবর্তীকালে জাতীয় সংস্কৃতির মূল স্রোতধারার সংগে সংগতি রেখে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকে জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান হিসেবে এর উপর গবেষণা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে একাডেমীকে ১৬-৭-১৯৭৯ তারিখে ‘তথ্য সম্প্রচার, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতি’ বিভাগে ন্যাসত্ম করা হয় । একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায় শেষ হওয়ার পরও সরকারি রাজস্ব বাজেটে একাডেমি পরিচালনার নিমিত্ত অর্থ বরাদ্দ না থাকার সত্ত্বেও একাডেমিকে সচল ও টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু ভৌত অবকাঠামোর সুযোগ-সুবিধা ও নিয়মিত পরিচালনা অঙ্গ সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়। একাডেমিটিকে যাতে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ও কার্যকরীভাবে পরিচালনা করা যায় সে কারণে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান প্রাপ্তি ও ভৌত সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ১৯৮০-৮১ থেকে ১৯৮৩-৮৪ অর্থ বছরব্যাপী ২য় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অমত্মর্ভুক্ত করা হয় । এ প্রকল্পে অত্র একাডেমীর জন্যে মোট ১৭ (সতের)টি জনবল ধরা হয়। এই সময়েই সাজঘরসহ একটি মঞ্চ, দুই ইউনিট বিশিষ্ট স্টাফ আর্টিস্টদের জন্য সেমি-পাকা হোস্টেল নির্মাণ, বই-পুসত্মক ক্রয়, প্রয়োজনীয় জমি ক্রয়, কর্মসূচি পরিচালনা প্রভৃতি প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হয়। গত ২৬-০২-১৯৮২ তারিখে সরকার একটি রেগুলেশন জারী করে তার মাধ্যমে একাডেমীটি পরিচালনার ব্যবস্থা নেওয়া হয় ।
প্রকল্প সমাপ্তির পর ১৯৮৭ সালে ‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়’-এর পত্র নং ১/২/৬-১৮/৮৬/৮৮(৮) তারিখ: ২৮/১০/৮৭ মূলে এই প্রতিষ্ঠানটির জনবল ১৯৮৪ সালের জুলাই থেকে ভূতাপেক্ষ রাজস্ব খাতে হসত্মামত্মর করা হয়। উলেক্ষ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রথম প্রকল্পাধীনে জনবলের সংখ্যা ছিল মোট ১৬ (ষোল) জন। কিন্তু পরবর্তী ২য় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রকল্পের অধীনে আরও একটি জনবল (নৈশ প্রহরী) বৃদ্ধি করা হলে মোট জনবলের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭টি । পরবর্তীতে এই ১৭টি জনবলই রাজস্ব খাতে হসত্মামত্ম করা হয় ।
নেত্রকোণা জেলার মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়কে সভাপতি করে মোট ১১ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বাহী কমিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে থাকে।
২০১০ সালে একাডেমীটিকে একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে রূপদানের জন্য সরকার কর্তৃক ‘সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০’ নামক আইন অনুমোদন করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী’-এর পরিবর্তে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমী’ নামটি প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে।
সরকারের রাজস্ব বাজেটের আওতায় ২০০৪-২০০৮ অর্থ বছরব্যাপী ২.৫০ লক্ষ (দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়বিশিষ্ট অধিকতর উন্নয়ন কর্মসূচি নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। উক্ত কর্মসূচির আওতায় ২০০ আসন বিশিষ্ট একটি অডিটরিয়াম ভবন (৭০৫০ বর্গফুট), ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি গেস্ট হাউস (৩৮৬০ বর্গফুট), ২৪ জন শিল্পীর থাকার মত হোস্টেল ভবন (৪৮১০ বর্গফুট), নিরাপত্তার জন্য সীমান দেয়াল (২৩১৬ বর্গফুট), গ্যারেজ এবং ড্রেনেজ সিস্টেম এ গুলোর নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়। অপ্রতুল অর্থ বরাদ্দের কারণে অডিটরিয়াম ভবন, হোস্টেল ভবন, ও সীমানা দেয়াল নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। সেই সঙ্গে গেস্ট হাউজ ও হোস্টেলের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও ক্রয় করা সম্ভভপর হয়নি।
পরবর্তীতে উক্ত কর্মসূচির ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে রাজস্ব বাজেটের আওতায় ২০১০-২০১১ হতে ২০১১-২০১২ অর্থ বছরব্যাপী ২৪০.১২ লক্ষ ( দুই কোটি চল্লিশ লক্ষ বার হাজার) টাকা ব্যয়বিশিষ্ট ‘অধিকতর উন্নয়ন কর্মসূচির অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ’’ শীর্ষক একটি কর্মসূচি গ্রহণ করে অডিটরিয়াম, গেস্ট হাউস, সীমানা দেয়াল ও মহিলা হোস্টেল নির্মাণের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হয়। সোলার প্যানেল স্থাপন ও এসি না থাকার কারণে এখনো অডিটরিয়াম ভবনটি অব্যবহৃত অবস্থায় আছে।
২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থ বছর ব্যাপী ১৪৬.১৮ (এক কোটি ছেচল্লিশ লক্ষ আঠার হাজার) টাকা ব্যয় বিশিষ্ট আরও একটি কর্মসূচির কাজ হাতে নেয়া হয়েছে । এ কর্মসূচির মাধ্যমে অডিটরিয়াম ভবন ও গেস্ট হাউস ভবনে এসি স্থাপন করা হবে এবং পুরো একাডেমী ক্যাম্পাসে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস